টিপস & ট্রিকস

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার এবং করণীয়

বর্তমান সময়ে একদিকে করোনার থাবায় বিপর্যস্ত দেশ। ঠিক এই সময় অন্য এক আতঙ্কের নাম হচ্ছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই শতেরওপর রোগী ভর্তি হচ্ছে নানা হাসপাতালে এই  ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ নিয়ে। ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ যেসব থাকে তা প্রায় অন্যসব রোগের মতোই।

ডেঙ্গু জ্বর কি?ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে কতো দিন সময় লাগে?

ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ঘটে ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে। এই ভাইরাসের বাহক এডিস নামক স্ত্রী মশকী। এর কামড়েই ডেঙ্গু হয়। ডেঙ্গুজ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে ১৩ দিনের মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।

ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ:

. তীব্র জ্বর (১০৪°-১০৫° ফারেনহাইট) হওয়া;

. মাথাব্যথা চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া;

. শরীরের অস্থি, কোমর এবং মাংসপেশিতে তীব্র প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হওয়া;

. ক্লান্তিবোধ, অরুচি বমি বমি ভাব যাওয়া;

. শরীরজুড়ে লালচে দানা দেখা যাওয়া;

ডেঙ্গুর বিপজ্জনক লক্ষণ:

. ক্রমাগত বমি হওয়া;

. তীব্র পেটে ব্যথা হওয়া;

. অতিরিক্ত দুর্বলতা, অবসাদ কিংবা অস্থিরতা হওয়া;

. পেটে বা ফুসফুসে পানি জমা শ্বাসকষ্ট হওয়া,

. রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যাওয়া;

. শরীরের হাতপা অন্যান্য অংশ ঠান্ডা হয়ে যাওয়া;

একই রোগী কি কোভিড এবং ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন ব্যক্তি একই সাথে কোভিড ১৯ এবং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন।

বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক (এবিএম) আবদুল্লাহ বলেছেন যে, ডেঙ্গুজ্বর এবং কোভিড১৯দুটোইভাইরাস জনিত রোগ হলেও এই দুটো রোগের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

তিনি আরো বলেছেন, দুইটার ক্ষেত্রেই জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি এবং স্বাদ না থাকা লক্ষ্যণগুলা রয়েছে।

ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীই সাধারণত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। পরিস্থিতি গুরুতর হলে অবশ্যইচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যাতে কোনো গুরুতর জটিলতার সৃষ্টি না হয়।

ডেঙ্গু হলে যে সকল খাবার খাওয়া উচিৎ/করণীয়গুলো:

.দিনেঅন্তত আড়াই লিটার থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিৎ।

. বিভিন্ন ধরনের সবজি থেঁতো করে জুস করে খাওয়া। যেমন: গাজর, টমেটো, শসা ইত্যাদি সবজি বেশি করে খাওয়া উচিৎ।পাশাপাশি মাল্টা, কমলা, লেবু, পেয়ারা, কিউই, স্ট্রবেরি, পেঁপে, আনার বা ডালিম ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

. নানা ধরনের স্যুপ, যেমন সবজির স্যুপ, টমেটোর স্যুপ, চিকেন স্যুপ বা কর্ন স্যুপ খাওয়া উচিৎ এতে করে পানির চাহিদা পূরণহয় ,পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা   নিশ্চিত হয়।

. খাদ্যতালিকায় আমিষ থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে। দুধ, ডিম এগুলোর তৈরি নানা খাবার, মাছ মুরগি খেতে হবে।

5. নানা ধরনের ভেষজ খাবার খাওয়া উচিৎ। দুটি তাজা পেঁপে পাতা চূর্ণ করে বেটে রস করে এক চামচ করে দুবেলা পান করতেপারেন। পেঁপে পাতা অণুচক্রিকা বাড়াতে সাহায্য করে যা ডেঙ্গুতে খুবই উপকারী।

ডেঙ্গু হলে যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়:

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ”ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চচারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনিইত্যাদি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের পূর্বে অবশ্যই তাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে গায়ে ব্যথা হলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়ানো যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলেরক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমে থাকার বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার হয়, যেটি ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী। ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধকরার জন্য একমাত্র উপায় হচ্ছে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। না হলে হসপিটালগুলাতে চিকিৎসক কুলাবেনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button