প্রিয় খেলা ফুটবল বাংলা রচনা
ভূমিকা :
ফুটবল আজকের দুনিয়ায় অত্যন্ত চমত্তার ও দর্শকনন্দিত একটি খেলা । এ খেলার সূত্রপাত হয় চীন দেশে । তবে অনেকের মতেআধুনিক ফুটবলের জন্মদাতা ইংল্যান্ড । বর্তমানে সারা বিশ্বে এ খেলাটি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে । আমার প্রিয় খেলাও – ফুটবল।চরম উত্তেজনাকর ও আনন্দদায়ক হওয়ায় এটি আমার প্রিয় খেলা ।
উৎপত্তি ও প্রচলন :
অনেকের মতে ফুটবল খেলা সর্বপ্রথম প্রচলিত হয় চীন দেশে । তবে অধিকাংশের ধারণা হচ্ছে , রোমানরাই সর্বপ্রথম ইউরোপেফুটবল খেলার প্রচলন করে । তারপর ইংল্যান্ডে এ খেলা প্রচলিত হলে ধীরে ধীরে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে । আমাদের দেশ তথাভারতীয় উপমহাদেশে এ খেলার প্রচলন করে ইংরেজরা ।
ফুটবল ও মাঠের বর্ণনা :
ফুটবল চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয় । এর ভেতরে রাবারের একটি থলি থাকে । থলিতে পাম্পের সাহায্যে বাতাস ঢুকানো হয় । এরাবারের থলিকে বাডার বলে।ফুটবলের ওজন সাধারণত ১৪ আউন্স থেকে ১৬ আউলের মধ্যে হয় । ফুটবলের পরিধি ২৭ ইঞ্চিথেকে ২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয় । ফুটবল খেলার জন্য একটি সমতল মাঠের প্রয়োজন হয় । মাঠের চারদিক সীমরেখা দ্বারা চিহ্নিত করাহয় । মাঠের দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট এবং প্রস্থ ৮০ ফুট । মাঠের দু প্রান্তে পরস্পর বিপরীত দিকে দুটি গোলপোস্ট থাকে । গোলপোস্টেরপেছনে দড়ির জাল দেওয়া থাকে। গোলপোস্টের ওপর যে বাঁশ বা কাঠ পোঁতা থাকে তাকে বার বলে।দুই পোস্টের মাঝে দূরত্ব ৮ গজএবং বার মাঠ থেকে ৮ ফুট উঁচুতে থাকে।
খেলার নিয়ম – কানুন :
আন্তর্জাতিক নিয়মে ফুটবল খেলার সময় ৯০ মিনিট । ৪৫ মিনিট করে দুই পর্বে খেলাটি সংঘটিত হয়ে থাকে । মাঝখানে ১০মিনিট বিরতির পর খেলোয়াড়দের পার্শ্ব পরিবর্তন করতে হয় । খেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একজন রেফারি থাকেন ।রেফারিকে সাহায্য করে দুজন লাইন্সম্যান । বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়কে বিনা কারণে আঘাত করলে ফাউল হয় । গোলপোস্টেরসামনে অবস্থিত ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টি কিক দেওয়া হয় । তখন গোলরক্ষক ছাড়া অন্য কোনো খেলোয়াড়কেআক্রমণ প্রতিহত করতে দেওয়া হয় না । কোনো খেলোয়াড় খেলার নিয়ম ভঙ্গ করলে রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে তাকে সতর্ককরেন । গুরুতর অপরাধ করলে লাল কার্ড দেখিয়ে তাকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয় ।
খেলার বিবরণ :
দুদলের ফুটবল খেলা হয় । প্রত্যেক দলে ১১ জন করে খেলোয়াড় থাকে।উভয় দলের অধিনায়ক সুদক্ষ সেনাপতির ন্যায় যোগ্যতাও পারদর্শিতা অনুসারে খেলোয়াড়দের সন্নিবিষ্ট করে থাকেন । উভয় দলে একজন করে গোলরক্ষক থাকে , যার বল ঠেকাতেশরীরের যেকোনো অঙ্গকে ব্যবহার করতে পারে । তবে তা নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে হতে হবে । অন্য কোনো অবস্থাতেই হাত দিয়েআইনত বল ঠেকাতে পারে না । অন্যরা হাত দিলে ধরলে বা হাতে বল লাগলে হ্যান্ডবল ধরা হয় । উভয় পক্ষই বলটিকেবিপক্ষের গোলপোস্টের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে । একে গোল দেওয়া বলে । যে পক্ষ অধিক গোল দিতে পারে , সেপক্ষ জয়ী হয় ।
উপকারিতা :
ফুটবল খেলা খুব আনন্দদায়ক । এ খেলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী । এ খেলায় শরীরের সকল অংশ উত্তমৰূপেপরিচালিত হয় বলে শরীরের অঙ্গ – প্রত্যঙ্গসমূহ মজবুত হয় । নিয়ম – শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয় বলে এ খেলার মধ্য দিয়েনিয়মানুবর্তিতা , কর্তব্যজ্ঞান , আদেশপালন ইত্যাদি শিক্ষা হয় ।
অপকারিতা :
ফুটবল খেলার অনেক উপকারিতা থাকলেও পাশাপাশি এর কিছু অপকারী দিকও রয়েছে । অসতর্কতার দরুন এ খেলায় অনেকসময় হাত – পা ভেঙে অনর্থের সৃষ্টি হতে পারে । এছাড়া দর্শকদের উত্তেজনার জন্যেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
উপসংহার :
ফুটবল খুব উত্তেজনাপূর্ণ ও আনন্দদায়ক খেলা । ফুটবল নাম শুনলে ছেলে – বুড়ো সবার মাঝে চাঞ্চল্য দেখা দেয় । খেলোয়াড় ওদর্শক উভয় পক্ষই এ খেলায় বেশ আনন্দ লাভ করে থাকে । তাই এটি বিশ্বজুড়ে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ।