রিভাইভ ইয়োর হার্ট বই রিভিউ (Revive your heart bangla Review)
নামঃ- রিভাইভ ইয়োর হার্ট bangla pdf(revive your heart book review)
লেখকঃ- নোমান আলী খান
যার বইগুলো মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যিনি ধর্মীয় যুক্তিতর্কের জন্য মুসলিমদের নিকট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার সুনাম বর্তমানে সমগ্র বিশ্বব্যাপী রয়েছে।
যিনি কুরআনের জ্ঞানে অসাধারণ গভীরতা এবং চমৎকার উপস্থাপনা-শৈলীর কারণে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।যার সুনাম বর্তমানে সমগ্র বিশ্বব্যাপী রয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকার মুসলিমদের কাছে।
তিনি আর কেউ নন, তিনিই রিভাইভ ইয়োর হার্ট‘ বইয়ের লেখক ওস্তাদ নোমান আলী খান।
নোমান আলী খান১৯৭৮ সালে জার্মানির রাজধানী বার্লিন শহরে জন্মগ্রহণ করেন।বর্তমানে তিনি কুরআনিক স্টাডিজের প্রতিষ্ঠান বাইয়্যিনাহ ইনিস্টিটিউট’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। এখন তিনি আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে বসবাস করছেন।
বইটি পড়লে আপনারা কি কি জানতে পারবেন এক নজর দেখে নিন:
আধুনিক বিশ্বে বিশ্বাসী মানুষেরা কিভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর সাথে কিভাবে হৃদয়ের কথা তুলে ধরেন।
কিভাবে একটি সুন্দর এবং পারস্পরিক সহযোগিতা মনোভাবাপন্ন সমাজ গড়ে তুলতে হবে তা জানতে পারবেন।
আজকের দিনের উম্মার অটো বড় চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে সামলাবেন তা জানতে পারবেন।
এইসব প্রশ্ন ও এগুলোর উত্তর খুঁজে পাবেন ওস্তাদ নোমান আলী খানের লেখা রিভাইভ ইয়োর হার্ট এই বইয়ে।
বইটি যেভাবে সাজানো হয়েছে:
প্রথম অংশে,বিপন্ন এবং হতাশা সময় দোয়ার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অংশে, সমালোচনা ,অনুমান এবং নেতৃত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
তৃতীয়াংশে,আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
চতুর্থ অংশে, কিছু সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
পঞ্চম অংশে,আখিরাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
রিভাইভ ইয়োর হার্ট বইটির ভূমিকা:
আজকের বিশ্ব মরীচিকার কবলে পড়েছে। বিরামহীন গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে আছে।রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম, বিনােদন জগৎ, প্রযুক্তি এবং আরও হাজারাে উন্নয়নের এই চলমান মরীচিকা আমাদের মনােযােগ আকর্ষণের জন্য নিরন্তর প্রতিযােগিতা করে
যাচ্ছে। আর আমরাও সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য মেতে উঠেছি।
সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা আমাদের কোমল হৃদয় গুলোকে কঠিন করে তুলছে। শুধু তাই নয় আজকেরে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা আমাদের প্রতিটি ব্যক্তিসত্তাকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভোক্তায় পরিণত করছে। যার ফলে আমাদের দিনও এই ব্যবস্থাপনার প্রভাবে বিনোদনে পরিণত হয়েছে।
যদি কখনো কোনো দ্বীনি স্কলারদ্বীনি কথা বলে আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে দেয় ।তারা আমাদের কাছে তারকা হয়ে ওঠে ।কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে দ্বীনি হিসেবে গর্বিত মনে হয়। তারপরেই আমরা ফিরে যাই আমাদের ভোগবাদী জীবনে। যেখানে রয়েছে শুধু মরীচিকা আর মরীচিকা। যা আখিরাতে মূল্যহীন।
বর্তমান বিশ্বে মুসলিম জাতি তারা তাদের পরিচয় নিয়ে সংকট ময় সময় পার করছে। মুসলিম জাতির ভাবমর্যাদা ছিনতাই হয়ে গেছে কিছু মুসলিমবিরোধী গোষ্ঠীর হিংসাত্মক কাজকর্মে। এই গুষ্টি মুসলিম জাতির তরুণদের আকৃষ্ট করছে যারা দ্বীন সম্পর্কে জানেনা। যাদের কাছে দ্বীনের আলোর অভাব রয়েছে। তারা দিন কে ধ্বংস করার জন্য অজ্ঞাত তরুণদের পিছু নিয়েছে। তাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সংবাদে শিরোনাম কাঁপানো কাজে নিজেদের আধিপত্য দেখানো। এ সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মসজিদগুলো পরামর্শ আদান-প্রদানের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া প্রয়োজন ছিল। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে,দ্বীন হচ্ছে যেকোনো ধরনের ভালো পরামর্শ দেওয়া।
আসলেই ঠিক এখন আমাদের মন হয়ে গেছে বিক্ষিপ্ত। আমাদের মনে শয়তান বাসা বেঁধে ফেলেছে।তাই এই মনকে ঠিক রাখার জন্য এবং আমাদের মনের ঈমানকে সুন্দর এবং অটুট রাখার জন্য ভালো এবং গঠনমূলক কথার প্রয়োজন খুবই বেশি।
আর তাই তরুণদেরচিন্তার জগৎকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ওস্তাদ নোমান আলী খান তরুণদের হৃদয়ের ভাষায় কথা বলেন। তাইতো তিনি তরুণদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
ওস্তাদ নোমান আলী খানের কথাগুলো আল্লাহর প্রতি কর্তব্য পালনের কথা স্মরণ করে দেয় এবং আমাদেরকে জীবনকে নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শেখায়। যখন এই পৃথিবী এর সমসাময়িক সংস্কৃতি আমাদের বলে, যা পাও হাত পেতে নাও কেননা মৃত্যু হলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে আমাদের ইসলাম আমাদের কে শেখায়, মৃত্যু হল আমাদের সত্যিকারের জীবনের শুরুর প্রথম ধাপ।
লেখক ওস্তাদ নোমান আলী খান তরুণদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে, আমরা যে পরিস্থিতিতেই থাকি না কেন আমরা যেন বাস্তবতার সঠিক ধারণা না ভুলে যাই।
আমরা প্রত্যেকেই জানি যে পৃথিবীর জীবন ক্ষণস্থায়ী। ক্ষণস্থায়ী এই জীবন আমাদেরকে ভাল কাজ করার জানালা খুলে দেয়। যদি আমরা উত্তম কাজ করি।
আর আমাদের এই কাজের ভিত্তিতেই আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা সিদ্ধান্ত নিবেন যে, আমরা কোথায় যাব । জান্নাতের বাগানে নাকি অন্য কোথাও। এই বইয়ে লেখক নোমান আলী খান একদম ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে বৈশ্বিক জীবন নিয়ে আলোচনা করেছেন। আর তিনি সেই আলোচনাকে আজ খন্ডে বিভক্ত করেছেন। প্রতিটি ভাগে তিনি প্রয়োজনীয় উপদেশ স্মরণ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় তিনি আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন । যেগুলো বর্তমান সময়ে মানুষের জানা অবশ্যই প্রয়োজন।
যেমন: চারপাশের মানুষ সম্পর্কে কেন খারাপ চিন্তা করা উচিত নয়, এবাদত এর সময় কিভাবে আল্লাহর সামনে বিনয়ী হয়ে দাঁড়াবে। তাছাড়াও তিনি মানুষের সামাজিক দোষ ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আশা করছি এই বইটি মুসলিম জাতির তরুণ সমাজকে আলোর পথ দেখাবে। মুসলমান হৃদয়ে আলোর নতুন পথ দেখিয়ে নতুন এক ধরনের উৎসাহ তৈরি করবে। আত্মিক উন্নয়ন এর পাশাপাশি বৃহত্তর সামাজিক দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে।