Biography

Jhankar mahbub lifestyle/biography (ঝংকার মাহবুব এর জীবনী)

ঝংকার মাহবুব এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের লিংক- https://www.jhankarmahbub.com/

Jhankar Mahbub Wikipedia নথি পাওয়া যায়নি. এখানে তাকে নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন.

ঝংকার মাহবুব এর জীবনী(Jhankar mahbub biography)

পাঠকসমাজে ঝংকার মাহবুব কে চেনে না এমন কোন পাঠক হয়তোবা এই দেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ঝংকার মাহবুব পেশায় একজন ওয়েব ডেভেলপার এবং ইউটিউবার পাশাপাশি তিনি একজন লেখকও। বাংলাদেশের তরুণ লেখকদের মধ্যে ঝংকার মাহবুব এর বই খুব সহজেই আলাদা করা যায়। কেননা তার লেখাগুলো সব বইতেই একটু ব্যতিক্রমধর্মী। যদি কোন পাঠক লেখক এর নাম না দেখে বই পড়া শুরু করে তারপরও সে আন্দাজ করতে পারবে যে এই বইটা ঝংকার মাহবুব এর লেখা।

কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কিভাবে এ দেশের তরুণদের জন্য সহজ করা যায় তিনি তার লেখা বইগুলোতে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যার ফলস্বরূপ ঝংকার মাহবুবের বই সমূহ এখন এ দেশের তরুণ প্রোগ্রামারদের কাছে প্রোগ্রামিং শেখার মজার বন্ধু হয়ে উঠেছে এবং এই বইগুলোর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছ।

ঝংকার মাহবুব এর সেরা পাঁচটি বই (pdf):

1.হাবলুদের জন্য প্রোগ্রামিং,

2.রিচার্জ ইয়োর ডাউন ব্যাটারি,

3.প্রোগ্রামিং বলদ টু বস,

4.প্যারাময় লাইফের প্যারাসিটামল,

5.প্রোগ্রামিংয়ের চৌদ্দগোষ্ঠী,

তা ছাড়াও রয়েছে:

চেষ্টার জিমনেসিয়াম ফিউচার এর ক্যালসিয়াম,

নেভার স্টপ লার্নিং,

রিচার্জ ইয়োর ডাউন ব্যাটারি,

যদিওবা বইগুলো লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রোগ্রামিং শেখা। তারপরওঝংকার মাহবুব তাঁর লেখার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন তরুণ প্রোগ্রামারদেরকে।

প্রত্যেক মানুষেরই ছোটবেলায় কিছু আচার আচরণের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের প্রতিফলন ঘটে। কেউ খেলাধুলায় আগ্রহী হয়ে ওঠে, কেউ টেলিভিশন দেখায় আগ্রহী হয়ে ওঠে, আবার কেউ গানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। আবার কেউ কেউ থাকে ছোটবেলায় বইপাগল। যাদের ধ্যান-ধারণা সবকিছুতেই শুধু বই থাকে। তাদের শৈশব কাটে শুধু পড়াশোনার মধ্য দিয়ে।

খুব অল্প বয়সেই ঝংকার মাহবুব লেখালেখির কাজ শুরু করেন। তার শুরুটা ছিল বাসায় দেয়ালে। বোনদের বইয়ের পাতায় কিংবা ঘুমন্ত অবস্থায় তার বাবার শরীরে তিনি আঁকা আকি করতেন। তবে ঝংকার মাহবুব এর অসীম প্রতিভা জোর করে প্রস্ফুটিত করার চেষ্টা পদে পদে তিনি বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। এসব বাধার মধ্যে অন্যতম বাধা ছিল গৃহশিক্ষকের বকা ঝকা, তার আম্মুর কাছে তার বোনদের নালিশ।

তাছাড়াও আরো নানান ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু তিনি ছিলেন তাঁর লক্ষ্যের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আর তাইতো তিনি এ সকল সমস্যাগুলোকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে তিনি তার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছেন।

শৈশব সম্পর্কে তিনি নিজেই নিজের সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনায় তিনি বলেছিলেন যে তার শৈশব সময়ের সকালটা শুরু হয়েছিল মক্তব দিয়ে। মক্তব শেষে গোসল করে, ভাত খেয়ে জগে করে দুধ-নিয়ে স্কুলের পথে বেরিয়েযেতেন।সাজুদার বাপের চায়ের দোকানে দুধ বিক্রি করে স্কুলে যেতেন। আবার স্কুল থেকে ফেরার সময় সকালে দোকানে বিক্রি করা দুধের জগ আর টাকা নিয়ে ফিরে আসছেন। বিকেলের সব কাজ শেষ করার পর তিনি সন্ধ্যায় পড়তে বসতেন।

জীবনের হাজারো অর্জন এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হাই স্কুলে থাকাকালীন সময়ে– ক্লাস নাইনে থাকার সময় তিনি ক্লাস সিক্স-সেভেনের জুনিয়র ক্যাটাগরিতে মোরগ লড়াইয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছিলেন। এছাড়াও তিনি যেকোনো কিছু শিখতে পছন্দ করতেন শুধু তাই নয় সাথে অন্যকে শেখাতেও পছন্দ করতেন। সেই সেই সময় থেকেই তিনি প্রোগ্রামিং ও সেলফ হেল্প রিলেটেড বই ।লেখা শুরু করেছিলেন। এ পর্যন্ত তিনি তিনবার ম্যারাথন দৌড় দিয়েছেন।

এসএসসিতে তিনি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছিলেন যা এক বিষয় লেটার। ঝংকার মাহবুব এর প্রিয় সাবজেক্ট ছিল ফিজিকস। কিন্তু সেখানে অবজেক্টিভ এ ১৬

আর২-৩ মার্ক কমপেলে তিনি ফিজিক্সে ফেল করতেন।

তবে সেই সময়ে ঝংকার মাহবুব এর একটা স্বপ্ন ছিল যে তিনি ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করবেন। কিন্তু তখনকার সময়ে তার রেজাল্ট খারাপ থাকার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

শুধু তাই নয় তিনি ঢাকার অনেক বড় বড় নামিদামি কলেজে ভর্তির ফরম কিনতে পারলেন না। অবশেষে তার ভাগ্য লেখা ছিল কুমিল্লার গৌরীপুরের জুরানপুর কলেজে। তিনি সেখানেই ভর্তি হন।

ঝংকার মাহবুব ২০০৭ সালে ভর্তি হয়েছিলেন বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে।

২০০৭ সালেই গ্রামীণ ফোনের ডিজুসপ্রজেক্ট ডি ইয়ুথ কম্পিটিশনে তার দল প্রথম স্থান লাভ করে।

খুবই সাদামাটা জীবন ছিল তার। ভার্সিটির ফাস্ট প্রেজেন্টেশন দেওয়ার সময় টা ছিল ঝংকার মাহবুব এর জন্যখুবই অন্যরকম। বন্ধু থেকে টাকা ধার করে সেই টাকা দিয়ে পলিস্টারের রেডিমেড প্যান্ট কিনতেন। যে বন্ধু থেকে টাকা ধার করেছিলেন সেই বন্ধুর শার্ট এবং অন্য এক বন্ধুর কাছ থেকে জুতা ব্যবস্থা করে কোন বেল্ট ছাড়াই ভার্সিটির প্রথম প্রেজেন্টেশন দিতে গিয়েছিলেন। এটা সেই সময়ের কথা যে সময় তিনি থার্ড ইয়ারের ছিলেন।

সেই সময় তিনি জীবনধারণের জন্য টিউশনি করাতেন।

টিউশনির পাশাপাশি তিনি এডমিশন কোচিং এ ক্লাসে নিতেন। দিন শেষে তিনি যা আয় করতেন তা দিয়ে তিনি নিজেও চলতেন পাশাপাশি ছোট ভাইবোনদের পড়ার খরচ ও চালাতেন। এতকিছু করার পরও তিনি আইপিই এর প্রথম ছাত্র হিসেবে সিজিপিএ ফোর আউট অফ ফোর পেয়েছিলেন। 

ঝংকার মাহবুব এর কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়ার খুবি প্রবল ইচ্ছা ছিলো। যার কারণে তিনি পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিল যে কম্পিউটার সাইন্স এর উপর মাস্টার্স কমপ্লিট করবেন। কিন্তু ঝংকার মাহবুব এর কম্পিউটার সাইন্স আন্ডার গ্রেট না থাকায় নর্থ ডেকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের হেড তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

কিন্তু তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী এবং নিজের লক্ষ্যের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।তারপর অনেক সাধনার পর কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় এর মাধ্যমে নর্থ ডেকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সপ্নের কম্পিউটার সাইন্স পড়ার সুযোগ পান।

পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে তাকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল।

কথায় আছে না,পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। আর ঝংকার মাহবুব হচ্ছেন তার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ।

বর্তমানে তিনি আমেরিকার শিকাগো শহরে নিলসেন কোম্পানিতে সিনিয়র ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত আছেন। 2015 সালে ঝংকার মাহবুব কারিনা ইসলামের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।বাংলাদেশ ও আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ত্রিশটির ও বেশি ডেভেলপার কনফারেন্সে বক্তব্য রেখেছিলেন ঝংকার মাহবুব।

ঝংকার মাহবুব এর শুরুটা হয়েছিল একেবারে শূন্য থেকে।

অথচ বর্তমানে, তরুণ পাঠকগণ তার বই পড়ার জন্য পাগল হয়ে যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button