mind wars pdf bangla & book review | online book bd
এটি একটি মাস্টারপিস বই । অল্পে ও সহজে পশ্চিমাদের এজেন্ডা ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইলে এই বইটি আপনার জন্য ।এইবিষয়ে এর থেকে ভালো বই বাংলা ভাষায় নেই । 3 of 3 people found this review helpful . Was this review helpful to you ? অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছি।একটি বইয়ে এত বেশী সাজানো গোছানো তথ্য আশা করিনি । বইটি সবার পড়াউচিত ।
বইটি কিনেছি এবং পড়েছি । মূলত কিভাবে মানুষের বিবেককে নিয়ন্ত্রণ করা যায় , ক্ষমতাসীনরা কিংবা রাষ্ট্র কিংবা ধর্মীয় নেতারাকিভাবে মানুষের বিবেককে নিয়ন্ত্রণ করে সেটার উপর অল্প সময়ে একটা তথ্যবহুল ধারণা পাওয়া যাবে । তবে অনুবাদ কিছু কিছুজায়গায় বেখাপ্পা লেগেছে । মনে হয়েছে , অনুবাদক গুগল ট্রান্সলেটর দিয়ে অনুবাদ করে তারপর বাংলা বাক্যগুলো মিলিয়েছে ।যায় হোক , তবে বইয়ের টাইটেল এবং ব্যাকপেইজে ইন্ট্রোটাচমৎকার ছিলো তা দেখেই বইটি কেনা ।
সূচিপত্র
- লেখকের কথা
- বুদ্ধির খেলা
- সামষ্টিক বিবেকের পরিবর্তন
- আচার ও কৃত্যানুষ্ঠান :বিবেক নিয়ন্ত্রণে আমাদের অতীত
- MKUltra এবং আধুনিক যুগের বিবেক নিয়ন্ত্রণ
- Paperclips & Programming : বিবেক নিয়ন্ত্রণে নাজি বাহিনী
- বিংশ শতাব্দির অনৈতিক মানবীয় গবেষণা
- প্রজেক্ট মোনার্ক : বাস্তবতা নাকি কল্পনা ?
- নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি ও কৌশলসমূহ
- নিজ ঘরে স্বাগতম !
- কাল্টের ইতিহাস : যুগে যুগে কাল্টের প্রভাব
- দুটি শিহরণ জাগানিয়া কাল্ট অভিজ্ঞতা
- মিডিয়া , বিজ্ঞাপন এবং সামাজিক মাধ্যম , বিবেকের শক্তি সক্রিয় হোক ! ..
- V2K , ইলেক্ট্রনিক হয়রানি , এনার্জি অস্ত্র ও ব্যক্তি আক্রমণ
- আপনাকে অনুসরণ করা হচ্ছে : আমেরিকার নজরদারি
- উপসংহার : আপনার বিবেকের মালিক কে ?
- গ্রন্থপঞ্জি
চলুন তাহলে দেরি না করে বইটির কিছু অংশ পড়ে ফেলি :
বুদ্ধির খেলা
সামষ্টিক বিবেকের পরিবর্তন “ ব্রেইনওয়াশ করার মাধ্যমে আপনার চিন্তাকে ধোঁয়াশাপূর্ণ করে দেওয়া হয় । গ্রহণযোগ্যতার স্বতন্ত্রমাপকাঠি দাঁড়িয়ে যায় । আকর্ষণ ও ঘৃণার সংজ্ঞা বদলে যায় । আপনি বাস্তবতা থেকে ছিটকে পড়েন । আপনার আকর্ষণ ওধোঁয়াশা নতুন বাস্তবতা তৈরি করে । ” এডওয়ার্ড হান্টার , Brainwashing । “ সবচেয়ে ভয়ংকর প্রযুক্তি হলো সামষ্টিক বিবেককেপরিবর্তনের প্রযুক্তি । যে কেউ এভাবে সমগ্র বিশ্বে রাজত্ব করতে পারে । ” তালবোট মান্ডি ।আমরা প্রত্যেকেই একটা কল্পনাররাজ্যে হাবুডুবু খাই ।
আমরা প্রবেশ করি , দর্শন করি ও উপভোগ করি । আমাদের মনে এক আলেকজান্ডার ধরনের ভাব আসে । “ আরেহ ! আমিতো স্বাধীন ! এই যে , যা খুশি তাই করছি ! ” আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিই , প্রশংসা পাই , খুশি হয়ে উঠি । আরভাবি যে আমরা অনেক নিরাপদ । দিচ্ছি , রিয়েক্ট পাচ্ছি– ব্যস ! অথচ আমাদের মাথায়ই থাকে না যে অনলাইনের সকল তথ্যএকটা গ্লোবাল আর্কাইভের আওতায় থাকে ।
আপনার ডিলেট মানে শুধু আপনার পিসি থেকেই ডিলেট । আমরা পলিথিনেরমতোই আবৃত — ঢেকে থেকেও সব উন্মুক্ত । বাস্তব জগতের এ অবস্থা দেখে আমরা ভেবে নিই , “ আচ্ছা যাই হোক , আমারঅন্তরের গোপনীয়তা তো আর কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না ! ” কেননা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হওয়া ছাড়া তো কেউআমাদের একেবারে একান্তের অনুভূতি , গোপন ব্যক্তিগত চাহিদা , চিন্তা বুঝবে না । আমরা মনে করি , আমাদের মন কেবলআমাদেরই । আমাদের সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষও আমি জানালে কিছু জানবে না ।
আমরা , কেবল আমরাই আমাদেরআচরণ নিয়ন্ত্রণ করি , আমাদের মনে ভাবি , আমাদের কাজের পরিকল্পনা করি , আমাদের অনুভূতি প্রকাশ করি , কেবলআমরাই আমাদের জগৎ নিয়ন্ত্রণ করি । আমাদের মন কেবলই আমাদের । মানবসভ্যতার প্রথম থেকেই কিছু মানুষ আমাদেরকেতাদের মতো ভাবানোর চেষ্টা করেছে । আমাদের পবিত্র , Golden Fleece , a Holy Grail এর মতো অন্তরটাকে তারা তাদেরব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ও এজেন্ডায় কাজে লাগিয়েছে । তারা এভাবে তাদের প্রভুকে খুশি করে । আমরা যবে থেকে আমাদের অন্তরকেনিজের ভাবতে শিখেছি , তখন থেকেই কেউ না কেউ আমাদের বিবেক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় মত্ত । ইতিহাসে মন নিয়ন্ত্রণকে অনেকনামেই সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ।
কিন্তু সবসময়ই এর লক্ষ্য ছিল আমাদের চিন্তার শক্তি ছিনিয়ে নেওয়া এবং আমাদের কাজ ওস্বভাবকে নিয়ন্ত্রণ করা । Brainwashing , coercion , thought reform , mental manipulation , psychological warfare , programming , conversion , gas lighting , indoctrination methods , | psychic driving , crowd control— যে নামেইআপনি একে ডাকুন না কেন , এটি আপনার চিন্তাশক্তি , বিবেককে ধ্বংস্র করার কাজেই লাগানো হয় । অনেক সময় আমাদেরকেঅন্যের মতো ভাবতেও শেখানো হয় । হতে পারে আপনাকে তারা একজন দক্ষ গুপ্তঘাতক কিংবা যোদ্ধা বানিয়ে তুলবে , নিজেদেরধর্ম বা রাজনৈতিক আদর্শে আপনাকে প্রবেশ করাবে ও বিজয়ী শক্তির মতাদর্শ অনুযায়ী আপনাকে ভাবতে শেখাবে । এমনটাআগেও করা হয়েছে , এখনও হচ্ছে , সন্দেহ নেই ভবিষ্যতেও হবে ।
অনেকেই দাবি করেছেন , বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষকরা একে কেবলইএকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে দেখেন । বাস্তবতা তা নয় । American Psychological Association এর বার্ষিক সভায় মূল সদস্যরাবিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা করেছেন । তাদের এজেন্ডা ছিল , সন্ত্রাসী , ধর্মান্ধ গোষ্ঠীগুলোর বিবেক নিয়ন্ত্রণের শিকারলোকদের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা ।
২০০২ সালের নভেম্বরে APA এর প্রেসিডেন্ট কলামে “ Mind Control : Psychological Reality of Mindless Rhetoric , ” শিরোনামে ড . ফিলিপ জি জিমবারডো লিখেছেন , “ সামাজিক বিজ্ঞান আমাদেরকে জানায় যে , বিবেক নিয়ন্ত্রণের স্বীকারযেকোনো ব্যক্তিই মিথ্যা বা ভুল স্বীকারোক্তি দিতে পারে । তারা তাদের শিখিয়ে দেওয়া শত্রুদেরকে হত্যা , নির্যাতন করতে পারে ।মিথ্যা বা ভুল যেকোনো উদ্দেশ্যের জন্য তারা তাদের সম্পদ , পরিবার এমনকি জীবনও দিয়ে দেয় ” ।
জিমবারডো আরো বলেন , “ এ তুমুল শক্তি ও শক্তিশালি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা অপরিহার্য । নয় আমরা একে প্রতিরোধ করতেপারবো না এবং প্রতিদিন আমাদের উপর নির্মম ও বেআইনি এক্সপেরিমেন্ট করা শয়তানদের সহজ শিকারে পরিণত হবো” ।জিমবারডো আসলে সকল ক্ষমতাসীন ব্যক্তি , রাষ্ট্রপতি , সরকার , পাদ্রী , সন্ত্রাসী নেতা ও গোয়েন্দাবাহিনীর কথাই বুঝিয়েছেন ।প্রত্যেকেই আমাদের অন্তরের অংশ চায় এবং তাদের উদ্দেশ্য অনুসারে আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ।
বিবেক নিয়ন্ত্রণেপপ কালচার ক্ষমতাসীন কিংবা বিজয়ী শক্তিদের মারাত্মক ব্রেইনওয়াশ নিয়ে যখন কথা আসে , তখনই চলে আসে পপকালচারের কথা । পপ কালচার ক্ষমতাসীন , সরকার কিংবা সরকারের গডফাদারদের ইচ্ছানুযায়ী গল্প ও ছবি চিত্রায়িত করে ।ওয়ার মুভিগুলোতে দেখানো হয় যুদ্ধবন্দিদের উপর বিজয়ীদের কী মারাত্মক নির্যাতন ! তাদেরকে ক্ষুধার্ত রাখা হয় , এমনকি সূর্যবা আলোর সংস্পর্শেও আসতে দেওয়া হয় না । এসবই করা হয় তথ্য আদায়ের জন্য ।
জিজ্ঞাসাবাদ , প্রভাবিত করার ক্ষেত্রেতুমুল নির্যাতনগুলো মানসিকভাবে প্রচণ্ড শক্তিশালি লোককেও টলিয়ে দেয় । Brainwashing শব্দটি আমরা সবাই জানি । প্রথমএ ধারণাকে পরিপুষ্ট করে চাইনিজরা । তারা মাও সে তুং এর সময় প্রত্যেককে ‘ সঠিক পথ দেখানোর জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহারকরতো । ১৯৫০ সালের অক্টোবরে Miami News এ প্রথম ইংরেজি ভাষায় এ শব্দ ব্যবহৃত হয় । সংবাদের শিরোনাম ছিল , “ Brain Washing Tactics Force Chinese Into Ranks of Communist Party , সাংবাদিক ছিলেন এডওয়ার্ড হান্টার । হান্টারআসলে সিআইএর একজন প্রপাগাণ্ডা কর্মী ছিলেন ।
তিনি সাংবাদিক হয়ে এ কাজ করতেন । সংবাদটা এতই জনপ্রিয়তা পায় যেপুরো ঠান্ডা যুদ্ধের সময় এ শব্দটি ব্যবহার করা হয় । আজও বিবেক নিয়ন্ত্রণকে আমরা Brainwashing বলেই সম্বোধন করি ।ব্রেইনওয়াশড মানুষ ভুলে যায় তার নিজস্ব চিন্তা চেতনা , নৈতিকতা এবং এ সুযোগে ব্রেইন ওয়াশকারীরা ইচ্ছেমতো তাকেপরিচালনা করে।